আপনার বাড়ি যদি গ্রামাঞ্চলে হয় অথবা শহর পেরিয়ে যতই গ্রামের দিকে যেতে থাকবেন সেখানে প্রাকৃতিক পরিবেশের সুন্দর দৃশ্যের চোখে পরে। মূলত গ্রামাঞ্চলে মানুষের জীবিকা নির্ভর করে কৃষি কাজের উপর। আবার পশু লালন-পালন কেউ অনেকে বেছে নেন জীবিকা হিসেবে। আর এর মধ্যে অন্যতম হলো গো-পালন। আর গরু থেকে পাওয়া গোবর সাধারনত জ্বালানি ও সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু, কখনো কি শুনেছেন এই গোবর দিয়ে তৈরি হচ্ছে চপ্পল? শুনতে অবাক হলেও ঘটনাটি সত্য। সম্প্রতি, গোবর ব্যবহৃত করে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরি করে উপার্জনের এক নতুন দিগন্ত প্রতিষ্ঠা করলেন এক যুবক।
ছত্রিশগড়ের রাজধানী রায়পুর এলাকায় গোকুল নগরের বসবাসকারী ঋতেশ আগারওয়াল গোবর থেকে কয়েক ডজন জিনিস তৈরি করে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছেন। এক প্রতিবেদনে জানা গিয়েছে, এই পশুপালক গোবর থেকে ব্যাগ, মানিব্যাগ, প্রতিমা, ইট, প্রদীপ, আবির এমনকি চপ্পল তৈরি করেন তিনি। যা রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছে সকলকে।
আয়ুর্বেদিক ভেষজ,চুন, গোবরের গুড়ো এবং আঠা মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছিল এই চপ্পলটি। তার মতে এক কিলো গোবর থেকে প্রায় দশটি চপ্পল তৈরি করা সম্ভব। আর চপ্পল গুলি যদি বৃষ্টির দিনে তিন চার ঘন্টা ধরে ভিজেও যায় তাতে তা নষ্ট হবেনা! পুনরায় রোদে শুকিয়ে আপনারা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে, গোবর থেকে যে এত কিছু জিনিস তৈরি হয় সে সম্বন্ধে অজানা সকলেরই। ২০০৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করে অনেক কোম্পানিতে কাজ করেও মানুষিক প্রশান্তি পাননি তিনি। তাইতো, সমাজের জন্য সবার থেকে কিছুটা আলাদা করে দেখাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ঠিক কোন পথে হাঁটবেন তা বুঝতে পারছিলেন না তিনি।
এই প্রসঙ্গে তিনি জানান, ‘আমি প্রায়ই রাস্তা ঘাটে গরু-বাছুরদের ঘুরে বেড়াতে দেখতাম। অনেক সময় প্লাস্টিক জাতীয় আবর্জনা খেয়ে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয় তাদের। আবার অনেক গরু দুর্ঘটনার শিকার হয়।’ তাই ২০১৫ সালে চাকরি ছেড়ে গোশালায় গো-সেবার কাজে যুক্ত হন তিনি। এমনকি গোবর থেকে বিভিন্ন ধরনের জিনিসপত্র তৈরি শেখার পর স্থানীয় লোকজনকে কাজের সঙ্গে যুক্ত করে তাদের রোজগারের ব্যবস্থা করেছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালে বাজেট অধিবেশনের ছত্রিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বাঘেল এক ব্যাগ পেশ করতে বিধানসভায় পৌঁছেছিলেন, তখন তার হাতে গোবরের ব্যাগটি তৈরি করেছিলেন রিতেশ ও তার সংস্থা ‘এক পহল’।