দুস্থ পড়ুয়াদের জন্য খুলেছেন কোচিং সেন্টার, খরচ চালাতে স্টেশনে কুলির কাজ করছেন কলেজ অধ্যাপক

বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় চোখ রাখলেই, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া নানান ভালো কাজের নিদর্শন অতি সহজেই পাওয়া যায়। ঠিক সেরকমই এক ঘটনা রয়েছে উড়িষ্যার গঞ্জম শহরের নগে শুভ পাত্রের (Nageshu Patra)। গরিব ঘরের ছেলে নগেশু এক প্রাথমিক কলেজের অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করতো। তবে এই কাজের পাশাপাশি সমাজে পিছিয়ে পড়া দুস্থ বাচ্চাদের, গড়ে তোলার কাজে নিয়োজিত হয়েছিল সে।
আর্থিক অনটনের কারণে ১২ ক্লাসের পরীক্ষা পর্যন্ত দিতে পারেনি নগেশু। তবে প্রথম থেকেই তার স্বপ্ন ছিল, পিছিয়ে পড়া ছেলেমেয়েদের বিনা পয়সায় পড়াবে সে আর করোনার সময় এই কাজেই নিয়োজিত হয়েছিল। অষ্টম শ্রেণী থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত হতদরিদ্র ছেলেমেয়েদের বিনা পয়সায় পড়াতো নগেশু।
এরপর পড়ুয়া সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে একটি কোচিং সেন্টার খুলে নেয়। সেই কোচিং সেন্টারে রাখতে হয় আরো অন্যান্য শিক্ষক-শিক্ষিকা। তাদের খরচ বহনের জন্য রাতে রেলওয়ে স্টেশনে কুলির কাজ করে নগেশু। এর জন্য মাস গেলে ২০ হাজার টাকা পায় সে, যা দিয়ে ৩-৪ হাজার টাকা করে কোচিংয়ের চার জন শিক্ষক-শিক্ষিকার মাইনে হয়ে যায়। এর পাশাপাশি তার কলেজে পড়ানো টাকা দিয়ে সংসারের ঘরত চালায় সে। তার বাড়িতে রয়েছে বৃদ্ধ বাবা ও মা।
একটি বেসরকারি কলেজের অধ্যাপক থেকে দুস্থ বাচ্চাদের বিনা পয়সায় পড়ানোর, পথ চলার কাহিনীটা অতটাও সহজ ছিলো না নগেশুর। নগেশু জানিয়েছে, “দুস্হ বাচ্চাদের পড়াশোনা করানোর কাজটি সে চালিয়ে যেতে চায়। সে কখনোই চায় না, দুস্থ মেধাবী পড়ুয়ারা টাকার জন্য তাদের পড়াশোনা ছেড়ে দিক।“