
সোশ্যাল মিডিয়ার পাতায় চোখ রাখলেই নানান মানুষের দিনযাপনের কাহিনী দেখা যায়। কত মানুষ জীবনের চরম চড়াই-উৎরায়ের পরে সাফল্যের শিখরে পৌঁছায়, সেই দৃশ্য আবেগঘন করঃ তোলে সাইবারবাসীদের। সম্প্রতি রাজ্যের প্রত্যন্ত হরিশ্চন্দ্রপুর এলাকার দৌলতপুর গ্রামের এক শ্রমিকের ছেলের সাফল্য, নজর কাড়লো সকলের। জীবনে অভাব থাকলেও মেধাই শেষ কথা বলেই; তা প্রমাণ করে দিল ‘কেশব দাস’ নামের এই চরম মেধাবী ছাত্র।
চরম অভাবে কেটেছে তাদের দিন। পড়াশোনার জন্য মায়ের সোনার কানের দুল পর্যন্ত বিক্রি করতে হয়েছিল তাকে। বাবা ভিন রাজ্যে যেত শ্রমিকের কাজ করতে। এরপরে লকডাউনে সেই কাজও হারিয়ে যায়। তারপর রাজ্যে ফিরে এখানেই কাজ করতে শুরু করে তার বাবা। আর্থিক অভাবের কারণে কখনোই কোনরকম কোচিং নিতে পারেনি কেশব। ২০১১ সালে হরদমনগড় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৫৭ শতাংশ নাম্বার মাধ্যমিক পাস করেছিল সে। এরপর ২০১৩ সালে ৭৬ শতাংশ নম্বর নিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক।
মালদার গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৭৭ শতাংশ নম্বর নিয়ে এমএ পাস করে কেশব। এরপরে ২০২০ সালে WBCS পরীক্ষায় বসে। চলতি বছরেই তার ফল প্রকাশিত হয়, যেখানে WBCS এক্সিকিউটিভ ‘A’ বিভাগে ২৭ নম্বর স্থান দখল করে কেশব।
গ্রামের এই হতদরিদ্র ছেলের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ হবার কাহিনী, স্বাভাবিকভাবেই খুশির ঝড় এনে দিয়েছে গ্রামের মধ্যে। গ্রামবাসীরা প্রত্যেকেই অত্যন্ত খুশি কেশবের এই সাফল্যে। কিছুদিনের মধ্যেই ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসার হিসেবে যোগদান করবে কেশব। বাবা থেকে শুরু করে আত্মীয় সকলেই এই হতদরিদ্র বালকের সাফল্যে আনন্দ মুখরিত।